ঢাকা, বুধবার   ২৭ নভেম্বর ২০২৪

আইসিসিবির বুলেটিনের সম্পাদকীয়

জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমন ও বেসরকারী খাতের ভূমিকা 

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২১:৫৪, ১৯ জুলাই ২০২১

বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি, আবহাওয়ার পরিবর্তন, সমুদ্র-স্তর বৃদ্ধি, খরা ও বন্যার বৃদ্ধির সাথে সাথে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি দরিদ্র জনগোষ্ঠী ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি, খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার মুখোমুখি হচ্ছে এবং দারিদ্র্য অবস্থা থেকে বেড়িয়ে এসে উন্নত জীবন গড়ার সম্ভাবনা কমে আসছে।

ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি), মার্কিন নেতৃবৃন্দ কর্তৃক আয়োজিত জলবায়ু সম্মেলন  ও জি-৭ বৈঠকে জলবায়ু পবির্তন প্রশমন ও জলবায়ু খাতে অর্থায়নের জন্য বর্ধিত প্রতিশ্রুতির ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে, যদিও এই প্রতিশ্রুতিগুলি এখনও জাতিসংঘের প্যারিস চুক্তির প্রতিশ্রুতিবদ্ধ অর্জন থেকে অনেক দূরে। জলবায়ু অ্যাকশন ট্র্যাকার অনুসারে, এখন অবধি দাখিলকৃত সমস্ত লক্ষ্যের সমষ্টি বৈশ্বিক তাপমাত্রাকে শতাব্দীর শেষের দিকে আনুমানিক ২.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ করবে। তথাপি এটা প্যারিস চুক্তি অনুসারে শতাব্দীর শেষে বৈশ্বিক উষ্ণতাকে ২ডিগ্রি সেলসিয়াস-আদর্শিকভাবে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমিত রাখতে যথেষ্ট নয়। 

উন্নয়নশীল দেশগুলোর জলবায়ু কার্যক্রমকে সহায়তা করার লক্ষ্যে এক দশকেরও বেশি সময় আগে  উন্নত দেশগুলি যৌথভাবে ২০২০ সালের মধ্যে প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার একত্রিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। তবে জাতিসংঘের মতে, ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের লক্ষ্য পূরণ হচ্ছে না (২০১৮ এর সর্বশেষ প্রাপ্ত ডাটা অনুযায়ী ৭৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার), যদিও জলবায়ু অর্থায়ন "উর্ধ্বমুখী পথে"  রয়েছে। সুতরাং, এখনও অর্থের একটি বড় ঘাটতি রয়েছে। 

জাতিসংঘের মতে জলবায়ু অর্থায়নের জন্য বার্ষিক ১০০ বিলিয়ন ডলারের  প্রতিশ্রুতিবদ্ধতা "একটি মেঝে এবং সিলিং নয়"। জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচির (ইউএনইপি) অনুমান অনুযায়ী কেবলমাত্র উন্নয়নশীল দেশগুলিরই অভিযোজন ব্যয় ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতি বছর ১$০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ৩০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ২০৫০ সালের মধ্যে ২৮০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ৫০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হবে। 

এই উদ্বেগজনক ব্যবধান থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বিবেচনা করতে হবে পুরো সমাজে বর্র্তমান সময়ে এবং দীর্ঘমেয়াদে কীভাবে পরবর্তী কার্যক্রম যুক্ত করা যায়। আগত গ্লাসগো টঘঋঈঈঈ ঈঙচ২৬ ্সম্মেলনে প্যারিস চুক্তির পাঁচ বছরের পর্যালোচনার নিরিখে সরকারগুলির সমন্বিত উচ্চাকাঙ্খাকে বাস্তবায়নের বৃত্তকে প্রশস্ত করার অনন্য সুযোগ রয়েেেছ, বিশেষ করে ঘউঈ দেশগুলিকে বাহন হিসাবে ফোকাস করে। 

আইসিসি - ১০০ টিরও বেশি দেশে ৪৫ মিলিয়নেরও বেশি সংস্থার প্রতিনিধিত্ব করছে এবং জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের স্থায়ী পর্যবেক্ষক এবং বিজনেস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির টঘঋঈঈঈ এর ফোকাল  পয়েন্ট - তারা বিশ্বাস করে যে টঘঋঈঈঈ এবং প্যারিস চুক্তি সম্পাদনকারী দেশসমূূেহর জলবায়ু নীতি কৌশলগুলোর সুযোগ এবং বাস্তবায়ন পুনর্বিবেচনা করে প্রতিটি সেক্টর, আকার এবং এখতিয়ারে ব্যবসায়ের সম্পৃক্ততা কিভাবে বাড়ানো যায় তা মূল্যায়ন করা উচিত। 

সমাজ, অর্থনীতি ও ব্যবসায়ায়ের উপর মহামারীর বিরুপ প্রভাব এনডিসিগুলিতে বিকাশ ও সরবরাহের অসুবিধাকে আরও জটিল করে তুলেছে, যা বাস্তবসম্মত এবং সমন্বিতভাবে এনডিসিগুলির নকশা করাকে আরও গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে। এই চ্যালেঞ্জগুলি অতিক্রম করার জন্য সরকার এবং ব্যবসায়ীদের দ্বিগুণ প্রয়াসে প্রতিশ্রতিবদ্ধ হতে সংহতি ও চুক্তির  প্রয়োজন হবে। 

জলবায়ু কর্মসূচির আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টায় বহুজাতিক কর্পোরেশন এবং বড় আন্তর্জাতিক ব্যবসায়িক সংস্থাগুলির সম্পৃক্ততা যথেষ্ট পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে যদিও এটি এখনও বিস্তৃত ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের একটি অসম্পূর্ণ চিত্র, এমএসএমইগুলি জাতীয় এবং বৈশ্বিক পর্যায়ে অবদান রাখতে সক্ষম। 

এমএসএমইগুলি বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ভিত্তি – তারা বিশ্বব্যাপী ৯০ শতাংশ ব্যবসা করে, বহু দেশে প্রায় ৮০ শতাংশ কর্মসংস্থান করে, সম্মিলিতভাবে দুই বিলিয়ন লোককে নিয়োগ দেয়। তবুও টঘঋঈঈঈ  প্রক্রিয়াতে তাদের কণ্ঠস্বর এবং উপস্থিতি শক্তিশালী নয়। 

এটা প্রস্তাব করা হয় যে, সরকার এমএসএমইগুলিকে উপযুক্ত জলবায়ু প্রশমন ও অভিযোজনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণে উৎসাহিত করবে; এনডিসিগুলোর উদ্ভাবনের জন্য নমনীয় ভালো অভ্যসগুলো গড়ে তুলবে; যাতে করে মহামারীর সামাজিক এবং অর্থনৈতিক প্রভাব মোকাবেলা করতে পারে এবং এমএসএমইসহ ব্যবসায় এবং নিয়োগকারীদের সাথে বর্ধিত পরামর্শ ও সংলাপের জন্য টঘঋঈঈঈ এর অভ্যন্তরে একটি নিবেদিত এবং স্বীকৃত স্থান তৈরি করতে হবে। 

বেসরকারী খাতের এই প্ল্যাটফর্মটি জলবায়ু এবং পুনরুদ্ধারের এজেন্ডাগুলিকে রুপান্তরিত করার বিষয়ে প্র্যাকটিক্যাল এবং বাস্তবসম্মত সংলাপেরও ব্যবস্থা করতে পারে।

আরকে//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি